দাবাকে বলা হয় বুদ্ধির খেলা ও সবচেয়ে জনপ্রিয় বোর্ডগেম। এটি এমন একটি খেলা, যেখানে শুধু নিজের মনটাকেই সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হয়। এই খেলা শিখার চেয়ে বেশি করে অনুশীলন ও বুদ্ধি কাজে লাগানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দাবাতে দুটি দল থাকে। একটি দল হলো সাদা এবং অন্যটি কালো। প্রতিটি দলের ১৬টি ঘুঁটি থাকে। যথা- ৮টি সৈন্য, ২টি নৌকা, ২টি হাতি, ২টি ঘোড়া, একটি মন্ত্রী ও একটি রাজা। রাজা হলো দাবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘুটি। মন্ত্রী হলো সবচেয়ে শক্তিশালী ঘুঁটি। খেলায় যতগুলো ঘুঁটি হারিয়ে যাক বা দখল করা যাক না কেন, মূল কথা হচ্ছে রাজাকে চেকমেট করা। যে দল অপর দলের রাজাকে চেকমেট করবে, সেই বিজয়ী হবে। দাবার বোর্ডটিকে যুদ্ধের ময়দানের সাথে তুলনা করা হয়। দাবা বোর্ডটি ৮×৮ এককের হয়ে থাকে। বোর্ডটির একটি ঘর সাদা হলে, পরেরটি কালো হয়। এভাবে বোর্ডটির অর্ধেক কালো ও অর্ধেক সাদা রঙে রঞ্জিত থাকে। খেলাটি মোট তিনটি অবস্থায় বিভক্ত। যথা- ওপেনিং, মিডেলগেম ও এন্ডগেম। দাবা খেলায় অসংখ্য ওপেনিং রয়েছে। যথা- রিও লোপেজ, মোর্ফিস ডিফেন্স, সিলিয়ান ডিফেন্স, এলেখাইন্স ডিফেন্স ইত্যাদি। কিন্তু মিডলগেম ও এন্ডগেমে পুরোটা নিজে থেকে খেলতে হয়। এই দুইটি পর্যায়ে খেলায় কোনো ফাঁদ দেওয়ার কৌশল নেই। তাই, এই সময় সবসময় নিজের বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে ও কি চাল দেওয়া হচ্ছে তা দেখতে হবে। এটির ওপর নির্ভর করেই দাবাড়ুদের খেলার মান একেকরকম হয়ে থাকে। পৃথিবীতে অনেক বিশ্বখ্যাত দাবাড়ু চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। যথা- মিখাইল তাল, বোবি ফিশ্চার, গ্যারি কাসপারভ, মেগনাস কার্লসেন, পোল মোর্ফি, ভিশি আনান্দ ইত্যাদি। বাংলাদেশও দাবা খেলায় দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জিয়াউর রহমানসহ বাংলাদেশে এখন মোট ৩টি গ্র্যান্ডমাস্টার রয়েছে। বাংলাদেশে দাবা খেলার ভবিষ্যত উজ্জ্বল এখন। বাংলাদেশ যেন দাবা খেলায় আরো জনপ্রিয় ও দক্ষ হয়ে উঠুক, সেই আশা এখন সকল বাঙালির মনে।