হানিফ খুবই বুদ্ধিমান। তার ইচ্ছে আছে গোয়েন্দা হবার। কিন্তু বড় গোয়েন্দাদের দাপটে তার সে কাজটি করা সম্ভব হচ্ছে না। কেউ তার প্রতিভা সম্পর্কে জানে না। সে কারণে হানিফের খুব মন খারাপ। একদিন তার এক বন্ধু আতিফ এলো বাড়িতে। হানিফ বলল, ‘কিরে বন্ধু, কি খবর? ‘ আতিফ বলল, ‘এই তো ভালো আছি। দেখ না, এই সোনার আংটি কিনেছি পাঁচ মাস হলো। কিন্তু এখন এতে মরিচা পড়ে গেছে। এত দাম দিয়ে এটি কিনেছি, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হলো না। কপাল মন্দ।’ হানিফ সেটা নিয়ে চিন্তা করল কিছুক্ষণ। আতিফ তার হিরেটি টেবিলে রাখল। কিছুক্ষণ পর হানিফ তার বইটি ভুলে হিরেটির ওপর রাখল। এতে হিরেটি ভেঙে গেল। এতে আতিফ অনেক রেগে গেল। আতিফ বলল, ‘তোমাকে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’ হানিফ ঠান্ডা মাথায় জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি হিরে আর সোনার আংটি কোন দোকান থেকে এনেছ?’ আতিফ জবাব দিল, ‘আপন জুয়েলারি এন্ড ডায়মন্ডস স্টোর।’ হানিফ বলল, ‘ঠিক আছে। কাল বিকেল চারটায় কেন্দ্রীয় কারাগারে চলে এসো। সেখানে তুমি তোমার ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবে।’ অদ্ভুত ভেবে আতিফ বলল, ‘ঠিক আছে।’ কাল বিকেল চারটায় আতিফ কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌছাল। সেখানে দেখল যে যার থেকে সে হিরে আর সোনার আংটি কিনেছে, সে হাজতে বন্দি আছে। আতিফ হানিফকে জিজ্ঞেস করল, ‘কিরে ও কি করেছে? ও হাজতে কেন?’ হানিফ জবাব দিল, ‘তোমাকে ঠকিয়েছে বলে।’ আতিফ জিজ্ঞেস করল, ‘কি রকম?’ হানিফ বলল, ‘তোমার সোনার আংটিতে মরিচা পড়েছে। আসল সোনাতে কখনো মরিচা পড়ে না। কেবল নকল সোনাতেই মরিচা পড়ে। এ কারণে তোমার আংটিটা নকল সোনার তৈরি। আর হিরে সবচেয়ে শক্তিশালী লোহা। এটি হাতুড়ি দিয়ে মারলেও ভাঙে না। তো বই দিয়ে যদি হিরে ভেঙে যায়, তাহলে ওই হিরেটি অবশ্যই নকল। এ কারণে আমি পুলিশকে খবর দেই। আর পুলিশ এই দোকানের মালিককে গ্রেফতার করে। এবার তুমি তোমার টাকা এই দোকানদার থেকে ফেরত নাও। ‘ আতিফ হতবাক হয়ে গেল। সে বলল, ‘ধন্যবাদ, বন্ধু। তুমি গোয়েন্দা হওয়ার জন্য যোগ্য।’ হানিফ বলল, ‘আরে আমাকে গোয়েন্দা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে আজকে।’ আতিফ খুব খুশি হলো। আতিফ তার টাকা দোকানদার থেকে ফেরত নিল। হানিফ বুঝল, আজকে থেকে তাকে অনেক রহ্যসের কূল-কিনারা করতে হবে।