ভেবেছো কী কভু, কী হবে সবার
এক নিশিথে শমনের সহিতে
তুমি চলে গেলে, ফেলিবে কী তা কোনো প্রভাব?
কী হবে তার, যার দিন গুজরান হতো
তোমার গুনগান গেয়ে?
যে বিসর্জন দিল প্রাণ,
তোমারে সংসারে সেবিতে
কী হবে সেই পথের ধারে পড়ে থাকা ভিখাড়ির?
তোমার দেয়া খয়রতে যার ভরিত ক্ষুদ্র পেটখানি?
কী হবে সেই অবুঝ শিশুর?
তোমার বখশিশ হাতে পেলে যার
লাগতো না আর কোনোকিছু।
কী হবে সেই মসজিদের নামাজী ব্যাপারীর?
তোমার মত গুরুজনের দোয়ায়
যার খ্যাতি ছিল অপসারী।
কী হবে সেই বড় হয়ে যাওয়া সন্তান-সন্ততির?
না খেয়ে মরে বড় করতে যাদের কাটিয়ে দিয়েছো দিন।
হবে না কিছুই, মনে রাখবে না তোমায় কেহ
বিস্মৃত হয়ে বাকিদের মতো কবরে পচবে তোমার দেহ।
সেই জননী বিধবা রমণী গাবে না গুনগান তোমার
শীতল চক্ষে করুণ বক্ষে, করবে ভক্তি খোদার।
পথের ধারের প্রবীন ভিখাড়ি পাবে খদ্দের নূতন,
সদকার ছলে দেখাতে খোদাকে নেবে সবাই তার যতন।
সেই অবুঝ শিশু কভু দেয়নি তোমায় পাত্তা
নিত্যনতুন অতিথির আগমনে সামলে নিয়েছে ধাক্কা।
সেই ব্যাপারীর দোকানে যেন বেশ রমরমা ভাব
মসজিদে যাওয়া শত গুরুজনদের তেলাতে সে ব্যস্ত আজ।
সেই সন্তানেরা করিবে লড়াই,
তোমারে নামানোর পরে।
বেটা এত সম্পত্তি ভাগ করে নাই,
এত দেনা তার চুকাবো কী করে?
তুমি মরলে, হে মানব, হবে না কিছুই
কাদিবে সবাই দুদিন।
তারপর দেখিবে আপন কাজে,
ভুলিয়া যাবে দুর্দিন।
এ জগতে খুবই নগণ্য, ক্ষুদ্র সত্ত্বা তোমার,
তুমি মরলে কোনোকিছুই, আসে যায় না কাহার।